আগামী ২৮ মার্চ বিশ্বভারতীতে আবার সমাবর্তন উৎসবের আয়োজন হচ্ছে। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঝটিকা সফরে শান্তিনিকেতন আসছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। একমাস আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সমাবর্তন হয়ে গিয়েছে শান্তিনিকেতনে। তখন উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। কিন্তু এত কম সময়ের ব্যবধানে সমাবর্তন আয়োজনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। উপাচার্য নয়াদিল্লির নিয়োগকর্তাদের খুশি করতে চাইছেন বলে অভিযোগ প্রাক্তনী–আশ্রমিকদের।
কেন ফের সমাবর্তন হচ্ছে? ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর সমাবর্তন আয়োজন করলেও ছাত্র আন্দোলনের জেরে তা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল বিশ্বভারতী। তাই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি গোপনীয়তার সঙ্গে সমাবর্তন উৎসবের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়। এই উৎসবের মাত্র চারদিন আগে বিশ্বভারতীর নোটিশ ঘিরে বিভ্রান্তি দেখা যায়। সেখানে ২০২১ এবং ২০২২ সালের উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের যোগ দিতে বলে কর্তৃপক্ষ। যদিও পরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সময়সূচি দেখে শেষ মুহূর্তে আবার নোটিশ দিয়ে ২০২২ সালের পড়ুয়াদের ব্রাত্য রাখা হয়। সুতরাং সমাবর্তনে যোগদান করতে শান্তিনিকেতনে এসেও ফিরে যেতে বাধ্য হন অনেক প্রাক্তনী। তাই একমাস পর আবার সমাবর্তন হতে চলেছে। এবার ২০২২ সালের উত্তীর্ণ পড়ুয়াদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেওয়া হবে। তবে রাষ্ট্রপতি যেহেতু কয়েক ঘণ্টার জন্য আসছেন বলে খবর।
আর কী জানা যাচ্ছে? সমাবর্তনের মতো বৃহৎ অনুষ্ঠান বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে কখনও একমাসের মাথায় দু’বার হয়নি। আগে বছরে একবার সমাবর্তন হতো। সেখানে আচার্য তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়াদের হাতে ছাতিম পাতা তুলে দিতেন। পরে প্রধানমন্ত্রীদের ব্যস্ত থাকলে দু’তিন বছর অন্তর সমাবর্তন হতো। কিন্তু বর্তমান উপাচার্যের আমলে আচার্যের পরিবর্তে অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবিরোধী বলে মনে করছেন অনেকে।
কী বলছেন প্রাক্তনীরা? এত কম সময়ে সমাবর্তন আয়োজন করা নিয়ে ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানের মর্যাদা নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্বভারতীর আশ্রমিক ও প্রাক্তনীরা। কারণ এই ধরনের অনুষ্ঠান অত্যন্ত ব্যয়বহুল। অভিযোগ, ভবন ও মূল্যবান স্থাপত্য সংস্কারের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফান্ড নেই বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করে। অথচ আবার সমাবর্তন আয়োজনে লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন বলেন, ‘সমাবর্তন যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠান। এত কম সময়ে তা বারবার আয়োজন করলে সেই গরিমা থাকে না।’ অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএফএর সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটা নজিরবিহীন ঘটনা। এক মাসের মাথায় কেন দু’বার সমাবর্তন করা হচ্ছে কর্তৃপক্ষ তা ব্যাখ্যা করুক।’
এই খবর ইউনিকাস প্রতিস্থাপন করেনি তাই এর কোনো কৃতিত্ব অথবা দ্বায়িত্ব ইউনিকাস এর নয়। দয়া করে এর উৎস টি খুঁটিয়ে দেখুন। এই পোস্ট টি আপত্তিকর হলে, তা অবিলম্বে মুছে ফেলতে আমাদের সত্বর যোগাযোগ করুন।