রানাঘাট উত্তর–পূর্বের বিজেপি বিধায়ক নিখোঁজ বলে এলাকায় চাউর হয়ে গিয়েছে। কারণ স্কুল–কলেজের শংসাপত্র থেকে শুরু করে যে কোনও সরকারি কাগজ সই করতে এলাকার বাসিন্দাদের ফিরে আসতে হচ্ছে রানাঘাট উত্তর–পূর্বের বিজেপি বিধায়ক অসীম বিশ্বাসের কার্যালয় থেকে। একুশের নির্বাচনের পর থেকেই নিজের এলাকায় তাঁকে আর দেখা যায় না বলে অভিযোগ। এখন দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার প্রাক্কালে বিজেপি বিধায়কের অনুপস্থিতি নিয়ে আড়ংঘাটা, বহিরগাছি, দত্তফুলিয়া, যুগলকিশোর, কামালপুর–সহ একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে কে, কি বলছেন? এলাকায় এই খবর চাউর হয়ে যেতেই যুগলকিশোর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মানসী বিশ্বাস মাইতি বলেন, ‘স্কুল–কলেজের ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট, রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট–সহ যে কোনও নথিতে বিধায়কের স্বাক্ষর করার কাজের জন্য ওঁর কার্যালয়ে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফিরে আসতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।’ জেলা পরিষদের সদস্য বিজলী বিশ্বাস বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে জেলা পরিষদের সদস্য আমি। যখন স্কুল–কলেজের ফর্ম ছাড়া হয়, তখন আমার বাড়িতে দোতলা থেকে একতলা পর্যন্ত পড়ুয়াদের লাইন লেগে যায়। এমন দিনও যায়, যখন একদিনে আমাকে ৫০০ থেকে ৭০০ সই করতে হয়েছে। অথচ এই দায়িত্ব আমার একার নয়।’ দূরারোগ্য রোগের চিকিৎসা করতে ভিনরাজ্যে যাবেন রানাঘাট ২ ব্লকের বাসিন্দা হরিহর মালি বলেন, ‘দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করি। আমার নিজের ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে ভেলোরে যাব। সরকারি টাকা পাওয়ার জন্য বিধায়কের অফিসে গিয়েছিলাম। পেলাম না ওঁকে। এখনও পর্যন্ত কোনওদিন আমাদের বিধায়ককে চোখেই দেখিনি।’
কী বলছেন বিজেপি বিধায়ক? এদিকে গ্রামবাসীরা জানান, বিধায়ক পদে না থাকলেও এখনও পর্যন্ত মানুষের কাজ করে চলেছেন প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক সমীর পোদ্দার। এই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যেতে রানাঘাট উত্তর–পূর্বের বিজেপি বিধায়ক অসীম বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ধানতলায় আমার নিজের কার্যালয়ে এসে কোনও মানুষ হতাশ হয়ে ফেরত যান না। এখানে নির্দিষ্ট লোক রাখা রয়েছে। আমার স্বাক্ষর করা ফর্ম রয়েছে। তাঁরাই সব ব্যবস্থা করে দেন। রাজনৈতিকভাবে লড়াই করতে না পেরে তৃণমূল কংগ্রেস এখন আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের কুৎসা রটাচ্ছে। আমি বিজেপি বিধায়ক হওয়ায় বিধায়ক তহবিল থেকে এলাকার উন্নয়নের জন্য যে টাকা দিই, সেই অর্থ খরচ করে না পঞ্চায়েত কিংবা জেলা পরিষদ।’
পাল্টা কী বক্তব্য উঠে এল? বিজেপি বিধায়কের এই বক্তব্যের পাল্টা তোপ দেগেছেন নদীয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু। তিনি বলেন, ‘বিধায়কের কার্যালয়ে যদি সাধারণ মানুষের পরিষেবার জন্য সব ব্যবস্থাই থাকে, তাহলে তাঁদের হতাশ হয়ে পঞ্চায়েত অফিসে আসতে হচ্ছে কেন? জেলা পরিষদ কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয় যে উন্নয়নমূলক কাজ করার জন্য সেখানে রাজনীতির রং দেখা হবে। জেলা পরিষদ থেকে কোটি কোটি টাকার ওপেন টেন্ডার ডাকা হয়। উনি যদি টাকা পাঠিয়েই থাকেন, সেই টাকা খরচ হবে না কেন?’
এই খবর ইউনিকাস প্রতিস্থাপন করেনি তাই এর কোনো কৃতিত্ব অথবা দ্বায়িত্ব ইউনিকাস এর নয়। দয়া করে এর উৎস টি খুঁটিয়ে দেখুন। এই পোস্ট টি আপত্তিকর হলে, তা অবিলম্বে মুছে ফেলতে আমাদের সত্বর যোগাযোগ করুন।