Sports

আট বছর আগে কেটেছিল খরা, এবার মিলল ‘মুক্তি’

আট বছর আগে সেটা ছিল মে মাসের একটা সন্ধ্যা। এই বেঙ্গালুরু এফসি বিরুদ্ধে ম্যাচের পরই জাতীয় লিগের (ততদিনে আই লিগ) খরা কেটেছিল মোহনবাগানের। আর এবার মার্চের এক নিশিতে সেই সুনীল ছেত্রীর দলকেই আইএসএল ফাইনালে হারানোর পর আরও একটা ‘সুখবর’ পেলেন মোহনবাগান সমর্থকরা। কয়েক বছর ধরে ‘রিমুভ এটিকে’ দাবি তোলার পর অবশেষে এটিকে মোহনবাগানের কর্তা সঞ্জীব গোয়েঙ্কা জানালেন, আগামী মরশুম থেকে ‘এটিকে’ সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ক্লাবের নয়া নাম হচ্ছে ‘মোহনবাগান সুপার জায়েন্টস’। যে ঘোষণার পরই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। যাঁরা গুনগুন করছেন, ‘সাগরের উথাল পাতাল বুকেও এই নৌকা চলে। কত ঝড় বিবাদ সামাল, দিতে খেলাই কথা বলে।’

শনিবার গোয়ায় বেঙ্গালুরু এফসিকে হারিয়ে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এটিকে মোহনবাগান। তারপরই গোয়েঙ্কা জানিয়ে দেন, মোহনবাগানের নামের আগে থেকে উঠে যাচ্ছে ‘এটিকে’। আগামী মরশুম থেকে ‘মোহনবাগান সুপার জায়েন্টস’ নামে তরতরিয়ে এগিয়ে যাবে পালতোলা নৌকা। 

⦾ ATK removed from ATK Mohun Bagan: উঠে যাচ্ছে ‘ATK’, ISL জিতেই মোহনবাগানের নয়া নামের ঘোষণা গোয়েঙ্কার

সেই ঘোষণার পরই যেন ‘পরাধীনতার কারাগার’ থেকে ‘মুক্তি’ পেয়েছেন মোহনবাগান সমর্থকরা। যে সমর্থকদের কাছে মোহনবাগান ‘মা’, মোহনবাগান ‘জন্মদাত্রী’। যে সমর্থকদের রক্তের রং সম্ভবত লাল নয়, রক্তের রং ‘সবুজ-মেরুন’। তেমনই এক মোহনবাগান সমর্থক বলেন, ‘এরকম আইএসএল ট্রফি তো কত আসবে, যাবে। আজকের সবথেকে বড় ট্রফি তো হাজার-হাজার মেরিনারদের (মোহনবাগান সমর্থকরা) আবার মাঠে ফিরিয়ে দেওয়ার। কর্পোরেটের যুগে আবেগকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য ধন্যবাদ মিস্টার গোয়েঙ্কা। দেখা হচ্ছে, আবার সেই চেনা সবুজে-মেরুনে।’

একইসুরে আরও এক আদ্যোপান্ত মোহনবাগান সমর্থক বলেন, ‘মা গো, তোমায় এতদিন খুঁজছিলাম। তোমাকে আবার আমরা ফিরে পেলাম। জয় মোহনবাগান মা।’ অপর একজন বলেন, ‘এটিকে মুছল। মোহনবাগান থাকল। সাপোর্টারদের জেদ, ভালবাসার আইএসএল জয়।’ একইসুরে এক মেরিনার বলেন ‘মোহনবাগান নামের সামনে থেকে এটিকে সরে গেল। দীর্ঘ লড়াইয়ের ফল। শিরদাঁড়া সোজা রাখার ফল।’ 

‘মা’-কে ‘ফিরে’ পাওয়ার আনন্দের সঙ্গে মোহনবাগান সমর্থকদের অনেকেই সেই ২০১৫ সালের ৩১ মে’র সন্ধ্যাটার আবেগের মিল পাচ্ছেন। যেদিন বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় প্রায় দেড় দশকের খরা কাটিয়ে ভারতসেরা হয়েছিল মোহনবাগান। জিতেছিল আই লিগ (যা আগে জাতীয় লিগ নামে পরিচিত ছিল) সেদিনও প্রতিপক্ষ ছিল এই বেঙ্গালুরু এফসি। বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ১-১ গোলে ড্র করেছিলেন সঞ্জয় সেনের ছেলেরা। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে পিছিয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে ৮৬ মিনিটে সনি নর্ডের কর্নার থেকে বেলো রজ্জাকের হেডারে ১-১ গোলে ড্র করে কষ্টের অবসান ঘটিয়েছিল মোহনবাগান। উত্তর দিয়েছিল সমস্ত কটাক্ষ, দিয়েছিল ঠাট্টার জবাব। 

⦾ চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফুটবলারদের আত্মত্যাগের কথা শোনালেন ATK মোহনবাগানের কোচ ফেরান্দো

মোহনবাগান সেই ২০১৪-১৫ সালের আই লিগ ট্রফি জেতার পর যেন মনে হচ্ছিল, কান্তিভারায় যে বৃষ্টি হচ্ছিল, সেটা হয়তো সবুজ-মেরুন সমর্থকদের আনন্দাশ্রু। তাঁরা যেন আগে থেকেই বুঝে গিয়েছিলেন যে ‘এবার আসছে’। তবে শনিবার গোয়ার ফতোদোরা স্টেডিয়ামে বৃষ্টি হয়নি। বৃষ্টি হয়েছে কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে। হয়তো সেটা মোহনবাগান সমর্থকদের আনন্দাশ্রু, ‘মা’কে ফিরে পাওয়ার’ আনন্দাশ্রু, কে জানে! 

(————– সমাপ্ত ————–)

এই খবর ইউনিকাস প্রতিস্থাপন করেনি তাই এর কোনো কৃতিত্ব অথবা দ্বায়িত্ব ইউনিকাস এর নয়। দয়া করে এর উৎস টি খুঁটিয়ে দেখুন। এই পোস্ট টি আপত্তিকর হলে, তা অবিলম্বে মুছে ফেলতে আমাদের সত্বর যোগাযোগ করুন।